বাংলাদেশে প্রায় ১০০ এর বেশি প্রজাতির আম পাওয়া যায়। তম্নধ্যে ১২-১৫ টি জাত বহুল প্রচলিত এবং বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদিত হয়।
এতো আমের মাঝে আমরা প্রায়সই শুনে থাকি আঁটি বা গুঁটি আমের নাম। আসলে আঁটি আম কোনো আমের জাত নয়। এইটা অন্যান্য জাতের আঁটি থেকে হওয়া আম যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বাদে ও ঘ্রাণে মূল জাত থেকে কিছুটা আলাদা হয়। এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মূল জাত থেকে কম স্বাদ ও ঘ্রাণ বিশিষ্ট হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম রয়েছে।
আসুন আমরা আমের বানিজ্যিক ভাবে বংশবৃদ্ধির ব্যাপারে কিছুটা আলোচনা করি তাহলেই পুরো বিষয়টি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবো।
আম মূলত বীজ এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভাবে বংশবৃদ্ধি করে থাকে। তবে কৃত্তিম ভাবে আম গাছের শাখা অন্য গাছে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করা হয়। প্রাকৃতিক ভাবে বীজ থেকে হওয়া নতুন আমগাছ অনেক কারণে মূল গাছের গুনাগুণ হারিয়ে ফেলে। মাটিতে উপস্থিত পুষ্টি গুণ বা আশেপাশের আবহাওয়া এর প্রধান কারণ হতে পারে। যার ফলে বানিজ্যিক ভাবে দামি জাতের গুনাগুণ অক্ষুন্ন রাখার জন্য অল্প স্বাদ বিশিষ্ট গাছের ডাল কেটে সেখানে বানিজ্যিকভাবে দামি ও সুস্বাদু কোনো আমের জাতের ডাল দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়।
এই আঁটি থেকে হওয়া আমগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল আম থেকে অল্প সুস্বাদু হলেও কিছু ক্ষেত্রে এর পুরোপুরি ব্যতিক্রম। অনেক আঁটি আম আছে যা স্বাদে, ঘ্রাণে, ও গড়নে অত্যন্ত মজাদার এবং অনন্য।
যেমন অনেক আম আছে যা লিচুর সাইজের হয়। আমি আরেকটা গুঁটি আমের কথা জানি যেটা ভেতরে একদম পাঁকা অবস্থায় ও সাদা থাকে। তবে খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ও রসালো। এবং অন্যান্য স্বাভাবিক আমের চেয়ে অনেক বেশি রসালো।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব সুস্বাদু ও অনন্য জাতের আম বাজারজাত করা হয়না। মূলত দুইটা কারণে এটি ঘটে। প্রথমত বেশির ভাগ লোকজনই নিজের পরিবারের জন্য আমগুলো রেখে দেয়। আর দ্বিতীয়ত বাজারজাত করার মত যথেষ্ট আম থাকে না। এজন্য এসব অন্যন্য স্বাদের এবং অদ্ভত গড়নের এসব আম লোকচক্ষুর অগোচরেই থেকে যায়!
বাজারে যেসব আঁটি বা গুঁটি আমই আসে যেগুলো স্বাদে ও মানে তেমন ভালো নয়। এজন্য আমরা আঁটি বা গুঁটি আম শুনলেই সেটা খারাপ বলে ভেবে নিই। সত্য বলতে প্রথম জেনারেশনের আঁটি বা গুঁটি আম অনেক ক্ষেত্রেই মূল আম থেকে আলাদা করার কোনো উপায় থাকে না।